আখাউড়া-আগরতলা রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের সফল পরীক্ষণ

প্রসেনজিৎ রায়, ভারত

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৭ এএম


আখাউড়া-আগরতলা রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের সফল পরীক্ষণ

ছবিঃ সংগৃহীত

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিল্লিতে জি-২০'র শীর্ষ সম্মেলনের জন্য পূর্ব নির্ধারিত ৯ই সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি আগরতলা-আখাউড়া রুটে ট্রেন চলাচল। উল্লেখিত দিনে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতেই ব্যস্ত ছিলেন।

ইতিপূর্বেই দিল্লি থেকে ভারতের অর্থ বাণিজ্য মন্ত্রী নির্মলা সিতারমন আগরতলায় এসে উদ্বোধনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে গিয়েছিলেন। তখনই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ঘোষণা করেছিলেন ৯ই সেপ্টেম্বর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে যাবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই উদ্বোধন হবার কথা ছিল।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও এই নতুন আন্তর্জাতিক রেলপথে নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের রেল মন্ত্রণালয়। দুই দেশের রেল ও বাণিজ্যিক মন্ত্রণালয়ের একটি যৌথ ডিপ্লোমেটিক ও টেকনিক্যেল কমিটি আগরতলা-আখাউড়া রুটে নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষা জারি রেখেছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ই সেপ্টেম্বর) এই নবনির্মিত রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্যবাহী ট্রেন চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে একটি মালগাড়ি সফলভাবে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর স্টেশন থেকে শিবনগর  পর্যন্ত পৌঁছায়। 

এই রেলপথ নিয়ে দুই দেশের স্থানীয় মানুষদের মধ্যে দীর্ঘ কৌতুহল ছিল। তাই প্রায় আট বছরের মাথায় সেই কৌতুহল নিবৃত্ত ও স্বপ্ন পূরণ হতে দেখে যথেষ্ট খুশি লক্ষ্য করা গেছে দুপারের স্থানীয় মানুষদের মধ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচুর উৎসুক মানুষের ভীড় ও দেখা গেছে। পাশাপাশি ট্রেন চালকসহ দুই দেশের এই প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মধ্যেও ছিলো আনন্দের আবহ।

এদিন পণ্যবাহী ট্রেনের সাথে আসা বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান বাংলাদেশের সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে রওয়ানা দিয়ে  দুপুর পৌনে ১টায় ভারত-বাংলাদেশের শিবনগর সীমান্ত স্টেশনে পৌঁছায়। সেসময় স্থানীয় বাসিন্দারা হাততালি দিয়ে ট্রেনে থাকা রেলওয়ে কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে একটি নতুন আন্তর্জাতিক রেলপথের প্রথম রেলটির চালক হিসেবে ইতিহাসের অংশ হতে পারার আনন্দ চোখে মুখে ফুটে উঠেছে ট্রেনের দুই চালকের। 

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের এদিনের পরীক্ষামূলক পণ্যবাহী ট্রেনের সহকারী লকো মাস্টার ছিলেন বেলায়েত হোসেন জাহিদ। তিনি এমন একটি ইতিহাসের সাথে যুক্ত থাকতে পারার খুশি জাহির করেন। একই সঙ্গে তার বক্তব্য এই রেল যোগাযোগ  ভারত ও বাংলাদেশর মধ্যে চলমান সুসম্পর্ক আরও বাড়বে। এরজন্য নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ট্রেনটিরর প্রধান চালক ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন অভিজ্ঞ লোকোমাস্টার সাজু কুমার দাস। তিনি জানিয়েছেন,  চট্টগ্রাম-ঢাকা পথে ট্রেন চালানোর সুবাদে এই নির্মীয়মান প্রকল্পটিকে দীর্ঘদিন ধরেই দেখে আসছিলেন। তবে এত দ্রুত  এই রেলপথটি নির্মাণ হয়ে যাবে এবং তিনিই এই পথের প্রথম বাণিজ্যিক রেলটি চালাবেন এতোটা ভাবেননি। তাই এদিন নিজের সুখানুভূতির কথাও বলেন তিনি।  

প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেনটির সফল ট্রায়াল সম্পন্ন হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে নিজেদের খুশি জাহির, পরস্পরে শুভেচ্ছা বিনিময় ও ফটোসেশনের মাধ্যমে যৌথ আনন্দ ও উল্লাশ করেন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

Link copied