ভ‍্যালেন্টাইন ডে -বসন্ত ও ভাষা দিবস

মোঃ সাইফুল ইসলাম তানভীর, সিংগাইর

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৯:০৬ পিএম


ভ‍্যালেন্টাইন ডে -বসন্ত ও ভাষা দিবস

ছবিঃ একাত্তর পোস্ট

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভালো দামে সিংগাইরে ফুল চাষীদের মুখে হাঁসি রাত পোহালেই বসন্তের প্রথম দিন পয়লা ফাগুন আর ভালবাসা দিবস (ভ‍্যালেন্টাইন ডে) এই দুই  দিবস এখন থেকে পালিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।

এর সঙ্গে ফুলের বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি করেছে সাতদিন পরই মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস -একুশে ফেব্রুয়ারি।

তিনটি দিবসকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বিভিন্ন বাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটেও গোলাপসহ সকল ফুলের চাহিদা ব‍্যাপক বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে প্রায় চারগুণ । এতে ফুল চাঁষীদের মুখে কিছুটা হাঁসি ফুঁটলেও ফুলপ্রেমীদের কপালে পড়েছে ভাঁজ। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে ফুল ব‍্যবহারে হিমশিম খেতে হবে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে অনেকেই আবার কৃত্রিম ফুলের দিকে ধাবিত হতে পারেন।

১৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন ফুলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দেশি গোলাপের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, জারবেরা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গ্লাডিওলাস ২৫-৩০ টাকা ও রজনীগন্ধা ১০-১৫ টাকা,  জুঁই-বেলী মালা ৫০ টাকা, গাঁদা ফুলের মালা ৭০-৮০ টাকা, লিলি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, থাই-চায়না ও ইন্ডিয়ান গোলাপ ৮০ থেকে ১০০ টাকা,  অর্কিড ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছে দোকানিরা।

উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর গ্রামটিতে গোলাপ ছাড়াও এখন ব‍্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা,জুঁই-বেলী, গাঁদা,লিলি,থাই-চায়না, ইন্ডিয়ান গোলাপ ও অর্কিড। এছাড়াও উপজেলার তালেবপুর ও সায়েস্তা ইউনিয়ন এবং সিংগাইর সদর ইউনিয়নের গোবিন্দল গ্রামেও ব‍্যাপকভাবে ফুল চাষ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে ফোর্ডনগর গ্রামটি ইতিমধ্যে গোলাপ গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ হয়েছে। সামনের তিনটি দিবসে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এছাড়াও সারা বছরে অভ্যন্তরীণ ফুলের বাজারে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলেও জানান তারা।

এদিকে তিন দিবস ঘিরে ফুল কেটে বাজারে নিয়ে আসা এবং পরিচর্যায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের তিন বিশেষ দিনকে টার্গেট করে ফুলের বাজার ধরতে এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। প্রতিদিনের মত ফুল বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন চাষিরা। কেউ জমিতে পানি দিচ্ছেন। কেউ ওষুধ ছেটাচ্ছেন। কেউবা আগাছা পরিষ্কার করছেন। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।

আগামি ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকেই চাষিরা ফুল কেটে বাজারে নিয়ে আসছেন। এসব ফুল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় ফুল চাষী আব্দুল খালেক জানান, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি ও পরিচর্যা খরচের তুলনায় আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় আমরা লাভবান হতে পারছিনা। এবছর শৈতপ্রবাহের কারণেও ফুলের ফলন কম হয়েছে। বর্তমানে ফুলের চাহিদা ফুল বিক্রি হচ্ছে ভালো কিন্তু খরচ বাধে খুব একটা লাভ থাকছে না।

আছমত আলী জানান ফেব্রুয়ারিতে তিন দিবস থাকায় ফুলের চাহিদা বেড়েছে। আর জারবেরা ১০-১৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে বিধায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। গত কয়েক দিন ধরেই তারা ৮-১০ টাকা দরে প্রতি জারবেরা ফুল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। তবে সম্প্রতি বিদেশ থেকে কিছু প্লাস্টিক জাতের ফুল আমদানির কারণে তাজা ফুলের বাজারমূল্য কমছে।

সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ টিপু সুলতান সপন জানান, ফোর্ডনগরের ফুল অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখে। এখানকার মাটি ফুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়া ব্যাপক হারে ফুল উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া, চারা রোপণ, বাগান পরিচর্যা ও কীটনাশক প্রয়োগসহ যাবতীয় বিষয়ে চাষিদের সহযোগিতা করা হয়।

Link copied