মানিকগঞ্জের সিংগাইরে "চান্দহর প্রবাসী বন্ধু মহলের" উদ‍্যোগে আয়োজিত ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে ডারউইন মতবাদ (বানর থেকে মানব জাতি সৃষ্টি) নিয়ে সভাপতির সঙ্গে প্রধান বক্তার সৃষ্ট মতবিরোধে মাহফিল সভাপতির উপর জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে হট্টগোলে বন্ধ হয়ে গেছে ওই মাহফিল।

কমিটির হস্তক্ষেপে আমন্ত্রিত ওলামায়ে কেরাম নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেন। এ ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উপজেলার চান্দহর বাজার সংলগ্ন মাঠে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বাদ আছর ১৪তম এ ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সরেজমিন শনিবার প্রত‍্যক্ষদর্শী মুসুল্লীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিল চলাকালীন বিশেষ বক্তার বয়ান শেষে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রধান বক্তা মুফতি রিজওয়ান রফিকী তার ওয়াজ শুরু করেন।

মানবজাতির সৃষ্টি থেকে শুরু করে তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে মানুষ জাতি সৃষ্টির ডারউইন মতবাদ নিয়ে কথা বলতেই সভাপতি তাকে থামিয়ে দেন। অকথ্য ভাষায় গালামন্দ করে বক্তাকে আক্রমণ করতে উদ‍্যত হয়। এ সময় ইসলাম প্রেমী মুসুল্লীরা ওই সভাপতিকে লক্ষ্য করে মঞ্চে জুতা নিক্ষেপ করে। এতে হট্টগোল বেঁধে ওয়াজ মাহফিল পন্ড হয়ে যায়। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে আগত মেহমানদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়।

চান্দহর প্রবাসী বন্ধু মহলের সদস্য রতন মাদবর, মোফাজ্জল হোসেন, রবিউল খান ও হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের নিজেদের অর্থায়নেই ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবেই আমরা মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছি।

চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ সালাউদ্দিন বলেন, আমি স্বশরীরে ওই সময়ে উপস্থিত ছিলাম না। তবে সানোয়ার ভাইয়ের ওপর জুতা নিক্ষেপের কথা শুনেছি। স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, ওই সময় সভাপতি সানোয়ারের শরীরে গিয়ে জুতা লেগেছে।

এ প্রসঙ্গে সভাপতি মোঃ সানোয়ার হোসেন বলেন, কেউ যদি খারাপ কিছু করে সেটা প্রতিরোধ করা কি অপ্রীতিকর ঘটনা নাকি? উনি অশ্লীল ভাষা ব‍্যবহার করছিল। উত্তেজিত জনতা তাকে থামিয়ে দিয়েছে। তার ওপর জুতা নিক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এলাকা আমার, আমি যদি খারাপ কাজও করি অতবড় সাহস হবে না মুসুল্লীরা আমার উপর চড়াও হওয়ার।

চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি শওকত হোসেন বাদল বলেন, আমি ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে যেতে পারিনি। তবে শুনেছি সানোয়ার ভাইয়ের ওপর জুতা নিক্ষেপের কথা।

সিংগাইর থানার অন্তর্গত শান্তিপুর ( বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো আবু হানিফ বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই, স্টেশনে ছিলাম না।