দুমকীতে ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, দুমকী (পটুয়াখালী)

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ এএম


দুমকীতে ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

ছবিঃ সংগৃহীত

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় পটুয়াখালীর দুমকীতে মোঃ রাসেল হাওলাদার (৩৫) নামে এক যুবককে ধর্ষণ মামলায় জড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্য উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মোঃ নাসির হাওলাদার।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দুমকী প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে নাসির হাওলাদারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাসেল হাওলাদারের স্ত্রী নাজিয়া আক্তার।

তিনি লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, গত নির্বাচনে নাসির মেম্বারের পক্ষে তাঁর স্বামী রাসেল হাওলাদার সমর্থন না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে  প্রতিবেশী কহিনুর বেগমকে কুপরামর্শ দিয়ে তাঁর স্বামীকে অহেতুক মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন।

তিনি আরও জানান, মামলায় উল্লেখিত সময়ে তাঁর স্বামী পার্শ্ববর্তী কাসেম আকনের বাড়িতে পারিবারিক সালিশিতে উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে দুপুর ১টার দিকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী জোসনা আক্তার নামে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় পরের দিন (২৩ সেপ্টেম্বর) দুমকী থানায় মোঃ মোক্তার মৃধাকে ধর্ষণকারী এবং মোঃ রাসেল হাওলাদারকে ধর্ষণের প্ররোচনা ও সহায়তাকারী উল্লেখ করে ভিক্টিম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী জোসনা আক্তারের মা কহিনুর বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

এ মামলার ১ নং স্বাক্ষী ভিক্টিম নিজেই, ২ নং স্বাক্ষী ভিক্টিমের বোন মারুফা আক্তার (১৫) যিনি কিনা ঘটনার সময় মায়ের সাথে খালার বাড়িতে ছিলেন, ৩ নং স্বাক্ষী ভিক্টিমের বাবা কামাল শরীফ (৫০) যিনি কিনা ঘটনার সময় বরিশালে ছিলেন, ৪ নং স্বাক্ষী ইউপি সদস্য নাসির হাওলাদার (৪৫), ৫ নং স্বাক্ষী ভিক্টিমের খালা রেবেকা বেগম (৩৫) যিনি কিনা ঘটনার সময় নিজ বাড়িতে ছিলেন এবং ৬ নং স্বাক্ষী অত্র ওয়ার্ডের চৌকিদার মোঃ মিজানুর রহমান (৪৫)।

এদিকে সাংবাদিকদের দেয়া এক ভিডিও বক্তব্যে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী দাবি করে বলেন, সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মামলায় ঘটনার সময় দুপুরের দিকে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ভিডিওতে তিনি আরও দাবি করে বলেন, আমার ইজ্জত নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে দুইজন। একটা রাসেল আর আরেকটা মোক্তার। কিন্তু মামলায় রাসেল হাওলাদারকে ধর্ষণকারী উল্লেখ না করে প্ররোচনা ও সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণীর সাংবাদিকদের দেয়া অপর একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গেছে রাসেল হাওলাদার মোক্তারকে পাঠিয়েছে এবং রাসেল রাস্তায় ছিলো।

রাসেল মোক্তারকে পাঠাইছে এটা কিভাবে বুঝলেন ওই সাংবাদিকদের একজন এমন প্রশ্ন করলে তার জবাবে ওই তরুণী বলেন, এটা একটা চক্রান্ত! এ সময় পাশে থাকা তরুণীর মা কহিনুর বেগম বলেন, আউলাইয়া গেছে।

রাসেল হাওলাদারকে নিয়ে ভুক্তভোগীর একেক সময় একেক রকম বক্তব্যের বিষয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের তৈরি হয়েছে। সকল ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।

এ বিষয়ে নাসির মেম্বরের মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে একাত্তর পোস্টকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। রাসেল নির্বাচনে তাঁর সমর্থন করে নাই এমন কথা কোন দিন কাউকে বলেন নাই।  রাসেল তাঁর সম্পর্কে চাচাতো-খালাতো ভাই।

উল্লেখ্য, এ প্রতিবেদকের কাছে থাকা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ৫-৬ মাস আগে প্রতিবেশি অমল দাসের নামে জোসনা আক্তার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এক বয়স্ক লোকের কাছে অভিযোগ দিলে ওই বয়স্ক লোক অমল দাসের স্ত্রী ও জোসনা আক্তারকে নিয়ে এক জায়গায় বসে জিজ্ঞেসাবাদ করছেন। বয়স্ক ওই লোকের এক প্রশ্নের জবাবে জোসনা আক্তার বলেন, সত্যি হয়, সত্যিই তো করছে। সবারই তো মরতে হবে, সত্যি।

বয়স্ক লোকটি পাল্টা প্রশ্ন করেন, অমল দাসের বউয়ের কাছে বলোনি কেন? উত্তরে বলছেন অমল দাসের বউ তখন বেড়াইতে গেছিল। পাশে থাকা অমল দাসের স্ত্রী অরুনা রানী জোসনা আক্তারকে জিজ্ঞেস করেন, আমি কি বেড়াইতে যাইয়া ৬ মাস ছিলাম? তুই প্রতিদিন ২-৩ বার আমার কাছে আসো কিন্তু তখন বললি না কেন?

Link copied