গাড়ীচালক হত্যা মামলার প্রধান আসামি মমিন গ্রেপ্তার

শেখ সাখাওয়াত হোসেন

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩, ০২:৪৩ পিএম


গাড়ীচালক হত্যা মামলার প্রধান আসামি মমিন গ্রেপ্তার

ছবিঃ একাত্তর পোস্ট

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কারণে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার সম্রাট হত্যা মামলার প্রধান আসামি সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিন (৩২) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য জানিয়েছেন।

তবে, কিভাবে, কোনো পরিকল্পনায়, কাদের সাহায্যে সম্রাটকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি র‌্যাব। রোববার (২৬ মার্চ) রাতে ঢাকার হাতিরঝিল থানার বাংলামোটর এলাকা থেকে মমিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মমিন পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়া (দোকানপাড়া) গ্রামের বাহাদুর খাঁর ছেলে। নিহত সম্রাট একই উপজেলার মধ্য অরনকোলা রিফুজি কলোনী এলাকার আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে।

এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট দুইজন আসামি গ্রেপ্তার হলো। এর আগে মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন পিপিএম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় শনিবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সম্রাটের বন্ধু মমিনকে এক নাম্বার ও তার স্ত্রী সীমাকে দুই নাম্বার আসামিসহ আরও ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামি মমিন আত্মগোপনে চলে যায়। পলাতক এজাহার নামীয় আসামি মমিনকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে র‌্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের একটি দল, র‌্যাব-৩ এর সহযোগিতায় ঢাকার হাতিরঝিল থানার বাংলামোটর এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মমিনকে গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মমিনকে আমরা সোমবার ঈশ্বরদী থানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারপর আইনগত প্রক্রিয়া তারা গ্রহণ করবে।

র‌্যাব জানায়, নিহত সম্রাট প্রায় তিন বছর ধরে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিকিম কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউরি ফেদারোপের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

চালক সম্রাট প্রতিদিন রাত সাড়ে দশটার মধ্যে ডিউটি শেষে বাড়িতে ফেরত যেতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সম্রাট ডিউটি শেষে নিজ বাড়িতে না ফিরলে, তার পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে ফোন দিলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায়।

পরদিন শুক্রবার (২৪ মার্চ) নিকিম কোম্পানীর অন্য চালকদের কাছে নিহতের বাবা সম্রাটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায় যে, চালক সম্রাট ২৩ মার্চ রাত ৮টা ১০ মিনিটে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়ি নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন।

তখন পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে তারা জানতে পারে যে সম্রাট অফিসের গাড়িসহ বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়ায় তার পূর্ব পরিচিত বন্ধু আব্দুল মমিনের বাসায় গিয়েছিলেন।

সেই সূত্র ধরে সম্রাটের পরিবারের লোকজন মমিনের বাসায় গিয়ে মমিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী সীমা খাতুনের কাছে সম্রাটের ব্যাপারে জানাতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয় এবং সম্রাটের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হতে বিরত থাকেন।

চালক সম্রাট ও তার চালিত গাড়ি খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে পাবনা-কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী শিলাইদহ ঘাট এলাকা থেকে পুলিশ একটি সাদা জিপ গাড়িসহ চালক সম্রাটের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে।

এদিকে, সম্রাট হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সীমা খাতুনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার এস.আই তহিদ হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সীমা খাতুনকে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। পাবনা আমলী আদালত-২ এর বিচারক শামসুজ্জামান দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Link copied