পবিপ্রবিতে পদোন্নতির লোভ দেখিয়ে নারী সহকর্মীকে অনৈতিক প্রস্তাব

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২৭ অগাস্ট ২০২৩, ১১:১২ এএম


পবিপ্রবিতে পদোন্নতির লোভ দেখিয়ে নারী সহকর্মীকে অনৈতিক প্রস্তাব

ছবিঃ সংগৃহীত

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) প্রমোশন ও চাকরিতে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার লোভ দেখিয়ে এক নারী সহকর্মীর সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান টমাস। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সংস্থাপন শাখায় কর্মরত রয়েছেন। এ সংক্রান্ত ১৪ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। 

অডিওতে শোনা যায়, চাকরিতে প্রমোশন ও নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার টমাস ওই নারী সহকর্মীকে পটুয়াখালীর একটি বাসায় নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। একই সময় তিনি যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা বলেন।

এ সময় তিনি প্রচার অযোগ্য কথাবার্তার মাধ্যমে ওই নারী সহকর্মীকে রাজি করানোর চেস্টা করেন। তবে ওই নারী  তার অনৈতিক প্রস্তাব নাকচ করে দেন। পরে কোন কিছুর বিনিময়ে নারী সহকর্মীকে অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি করাতে না পেরে ওই কর্মকর্তা নিজের ক্ষমতার কথা বলে চাপ প্রয়োগ করেন। এ ঘটনায় শিক্ষা বার্তা অনুসন্ধান চালিয়ে যৌন হয়রানীর শিকার পবিপ্রবি'র ওই নারী কর্মকর্তাকে খুঁজে বের করেন। 

প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে ঘটনার পুরো সত্যতা স্বীকার করে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান টমাস প্রায় সময়ই কুপ্রস্তাব দিত। একজন মেয়ে মানুষ হওয়ায় এ নিয়ে কিছু করার ছিল না তাঁর।

টমাসের সংস্থাপন শাখায় ফাইল আটকে দেয়ার আশংকায় আমেরিকায় পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েও সেটি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে তাঁর। বিষয়টি তিনি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতিকেও জানিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনায় বিব্রত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ চাকুরীরতরা। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এসব ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হলে এই ক্যাম্পাস চাকরির জন্য অনুপযোগী হয়ে যাবে। নারীদের জন্য কর্মস্থলে যারা অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করছে তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত। কেউ এদের শেল্টার দিলে তাঁদেরও বিচার হোক। 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান টমাস বলেন, এ ঘটনা পুরো ষড়যন্ত্রমূলক। ডেপুটি রেজিস্ট্রার নঈম কাওছার ও আইটি সেলের ফারুক এডিটিং করে এসব ছড়াচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, নিজের অপকর্ম আড়াল করতে অন্যের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার টমাস। এতে করে অপরাধ লুকিয়ে রাখা যায় না। 

পবিপ্রবি'র রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড.সন্তোষ কুমার বসু শিক্ষা বার্তাকে বলেন, বিষয়টি যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। 

উল্লেখ্য, নারীর জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে যৌন হয়রানির বিষয়ে কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলা বিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে হইকোর্টের।

Link copied