রাবির গেস্টরুমে টর্চার, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন অভিযোগকারী

ফারজানা খান সারথি, রাবি

প্রকাশিত: ৫ অগাস্ট ২০২৩, ০৭:১২ এএম


রাবির গেস্টরুমে টর্চার, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন অভিযোগকারী

ছবিতে বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েম জেমস (বাম পাশে) ও সৈয়দ আমীর হল ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-সম্পাদক আল-আমিন (ডান পাশে)

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে ক্যাম্পাস ছেড়ে নিজ জেলা নীলফামারিতে চলে যান নিজ সংগঠনের দুই নেতার মারধরে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার অভিযোগকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগ নেতা মো. নজরুল ইসলাম।

শনিবার (৫ই আগস্ট) সকালে মুঠোফোনে ভুক্তভোগী নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল রাত ৯টায় তার নিজ গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় পৌঁছান তিনি।

মো. নজরুল ইসলাম রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক।

এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও ন্যায়বিচার পাইনি। গণমাধ্যমে নিউজ হওয়ার পর আমাকে চাপে রেখেছে অভিযুক্তরা। আমি নিজেকে নিয়ে খুব নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ফলে শেষমেশ হতাশ হয়েই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে আসলাম। এছাড়াও আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমার কানের চিকিৎসা করতে হবে। তাদের (অভিযুক্তদের) আশায় বসে থাকলে আমার হবে না। তারা আমার কোনো খোঁজখবরই রাখছে না। আমিতো আর আমার জীবনটাকে শেষ করে করে দিতে পারি না। কানতো সেনসিটিভ একটা জিনিস।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার জীবন নিয়ে শঙ্কায় ভুগছিলাম। যেহেতু ঘটনাটার এখনো কোনো মীমাংসা হয় নি, সেহেতু কিভাবে কনফিডেন্স নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াব। তারাতো আমাকে আবারও মারতে পারে। যেদিন মেরেছিল, সেদিনই হুমকি দিয়েছিল যে,‘‘যদি কাউকে বলিস, তাহলে তোকে আবার মারবো।”

ক্যাম্পাসে কবে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে আমি ক্যাম্পাসে ফিরব। এর আগে আমি ফিরব না।’

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন নজরুল ইসলাম। অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে-বাংলা-ফজলুল হক হলের গেস্ট রুমে মারধর করে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ সায়েম জেমস এবং সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক উপ-সম্পাদক আল-আমিন। 

তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত আলফাত জেমস ও আল-আমিন। তারা বলেন, তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় তাদের ফাঁসানোর জন্য এইসব অভিযোগ করছেন নজরুল।

সার্বিক বিষয়ে জানতে শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তের জন্য দুজন আবাসিক শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অফিশিয়ালি এখনো দায়িত্ব না পেলেও তারা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। একজন আবাসিক শিক্ষক ভুক্তভোগী নজরুলের সঙ্গে কথাও বলেছেন। আশা করছি তদন্তের মাধ্যমে মূল ঘটনা উঠে আসবে।'

Link copied