বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও রাবিতে বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা

সারথি অনি (রাবি)

প্রকাশিত: ৪ অগাস্ট ২০২৩, ০৮:১২ এএম


বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও রাবিতে বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা

প্রতীকী ছবি

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবছর ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পর্যায়ে ৮ জন নেপালি শিক্ষার্থী তাদের ভর্তি নিশ্চিত করেছেন। নেপাল থেকে সরাসরি রেমিটেন্স না আসার জটিলতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমতে থাকলেও এবছর বেড়েছে কিছুটা।

রাবিতে এ বছর গত বছর গুলোর তুলনায় বিদেশি শিক্ষার্থী সংখ্যা খানিকটা বেড়েছে। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে ৮ জন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চিত করেছে।

তবে তাদের বড় সমস্যা দাড়িয়েছে নেপাল থেকে সরাসরি রেমিটেন্স না আসায় তাদের আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে অর্থ আসছে তাদের কাছে এতে তাদের বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। এই সমস্যা দূরীকরণে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ উপাচার্য হুমায়ূন কবির বলেন, রেমিটেন্স আসার এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ইউজিসি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ তাই বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে এখানে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন না বলে তিনি জানান।

সর্বপ্রথম ২০১৪-১৫ সেশনে মাত্র দুইজন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর আগমন শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তালিকা, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সভাপতির দেওয়া তথ্য আর ডরমিটরিতে অবস্থানরতদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫ জন নেপালের, ৭ জন সোমালিয়ার এবং দুইজন জর্দানের শিক্ষার্থী মিলিয়ে মোট ৩৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে ৪৩ জন।

এরপর ২০১৭ সালে জর্দান, সোমালিয়া ও নেপাল থেকে দশজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। পরের বছর নেপাল ও জর্দান থেকে আটজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। কিন্তু মাত্র একজন নেপালি শিক্ষার্থী ছাড়া বাকি সাতজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

এদিকে ২০১৮ সালে চার সোমালি আর তিন নেপালি শিক্ষার্থী পায় রাবি। তবে এরই মধ্যে সেখান থেকে চলে গেছেন এক সোমালি শিক্ষার্থী এবং ২০১৯-২০ সেশনে চারজন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় ও সর্বশেষ ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাত্র ১ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন বিদেশি শিক্ষার্থী খরার কারণ বাংলায় পাঠদান, ভাষাগত দক্ষতা যাচাই, কোর্স না করানো,আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রমের অনুপস্থিতি, বই-নোটসহ বেশিরভাগ শিক্ষা উপকরণ বাংলায় থাকার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের অসহযোগিতাকে দায়ী করছেন তারা।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাবির ভর্তি নোটিশে পাঠ্যক্রমের কথা ইংরেজিতে জানিয়েও বাংলায় লেকচার দেওয়া হয়। আবার বাংলাদেশে পড়তে আসার সময় বাংলা বা ইংরেজিতে কতটা দক্ষ তার কোনো যাচাই-বাছাই করা হয় না। কোনো ধরনের ভাষা শিক্ষা কোর্সও করানো হয় না।

অপরদিকে, তারা বলেন ফি স্ট্রাকচারের কারণে বেশ সংখ্যক নেপালি শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গিয়ে পড়াশোনা শেষ না করেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের খাবারের সমস্যা ও ডরমিটরি বেশ পুরনো হয়ে যাওয়ায় তাদের কক্ষের দেয়ালের রঙ খসে পড়ছে বলে জানা যায়।

বর্তমানে মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশনাল ডরমিটরিতে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইন্সের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সান্নি কুমার দাস, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের নবীন কুমার দাস ও দীপক কুমার দাস, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের সুমিত শর্মা, দীপক দাস ও ফার্মেসি বিভাগের ২০১৯ -২০২০ শিক্ষাবর্ষের ধর্বেন্দ্র প্রসাদ গুপ্ত ও ধীরাজ কুমার যাদব সহ মোট ৭ জন নেপালি শিক্ষার্থী রয়েছেন এবং কালক্রমে টিকে যাওয়া ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ইলিট্রিইক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাইফ এলদিন সায়েদ নামের একজন জর্ডান শিক্ষার্থী রয়েছেন। 

এছাড়াও রাবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে আইন বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের অন্তরা হালদার নামে একজন ভারতীয় শিক্ষার্থী আছেন।

Link copied